আগের পর্ব পর্ব ১

সিজন ১, এপিসোড ৪

ডিজোন্যান্স থিওরি

এখন আমাকে ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর ৪ নাম্বার পর্ব নিয়া লেখতে হবে। এই কাজটা, অর্থাৎ ৪ নাম্বার পর্ব নিয়ে লেখার কাজটা ইন্টারেস্টিং এবং একই সাথে কিছুটা আনকমফোর্টেবল।

নিজের মনে মনেই ফান করতে করতে চিন্তা করলাম যে অভিনেতা অ্যান্থনি হপকিন্স আর ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর চার নাম্বার এপিসোডে যেসব দৃশ্য দেখানো হল সেগুলি নিয়েই লেখি। তাতে অস্বস্তি ব্যাপারটাকে পাশ কাটানো যাবে।


আশরাফুল আলম শাওন


কিন্তু সেটা করার প্রশ্নই আসে না! কারণ, এই লেখার যে উদ্দেশ্য বা পারপাস সেটা সার্ভ করতে হবে। আনকমফোর্টেবল কোনো কিছু ডিল করতে পারাটাই ইন্টারেস্টিং।

ডিজোন্যান্স থিওরি
ওয়েস্টওয়ার্ল্ডের সেটে ছবির পরিচালক জোনাথন নোলান

ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর চার নাম্বার এপিসোডের নাম ডিজোন্যান্স থিওরি। ডিজোন্যান্স মানে অসঙ্গতি। একটা অংশের সাথে আরেকটা অংশ খাপ খায় না এরকম কোনো জিনিস। এই নাম থেকেই হয়ত কিছুটা অনুমান করতে পারা যায় যে ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর চার নাম্বার পর্ব কেমন। এই কারণেই উপরে বলেছি যে কিছুটা আনকমফোর্টেবল। এবং হ্যাঁ, অবশ্যই ইন্টারেস্টিং।

এই চতুর্থ পর্বে এসে ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর পুরা কাহিনীকে ধাঁধার মত মনে হয়। মনে হয় খুব বড় একটা পাজল, এবং আস্তে আস্তে এই পাজল আরো বড় হচ্ছে। অনেক ভাবেই পাজলের সমাধান করা সম্ভব, কিন্তু পাজল মেলানো যাচ্ছে না।

একটা জটিল ধাঁধার মধ্যে প্রবেশ করলে যে রকম হয় ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর ক্ষেত্রেও তেমন হচ্ছে। আপনি যদি কোনো জটিল ধাঁধা বা পাজল বুঝতে পারেন, আপনার কাছে সেটা ইন্টারেস্টিং মনে হবে এবং সেটা মিলে না যাওয়া পর্যন্ত আপনার উপর চাপ বাড়তে থাকবে। যতক্ষণ না মিলবে ততক্ষণ এটা খুব আনকমফোর্টেবল মনে হবে, এটাকে পছন্দ করতে পারবেন না এবং এটা থেকে বের হয়েও আসতে পারবেন না।

ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর কাহিনী যে একটুও কনভেনশনাল রাস্তায় আগাচ্ছে না—এই ব্যাপারটা ওয়েস্টওয়ার্ল্ড সিরিজের ক্রিয়েটরের বুঝতে না পারার কোনো কারণ নাই। এটা জোনাথন নোলানের প্ল্যানেরই অংশ আসলে। জোনাথন নোলান অনেক বেশি বুদ্ধিমান এবং ক্রিয়েটিভ মানুষ। তিনি ইনটেনশনালিই অডিয়েন্সকে এই সিরিজের সাথে এইভাবে ইনভলভড করছেন এবং আস্তে আস্তে একটা এক্সট্রা অর্ডিনারি কাহিনীতে নিয়ে যাচ্ছেন।


এখন প্রশ্ন আসে যে, বুদ্ধিমান এবং ক্রিয়েটিভ জোনাথন নোলান ইচ্ছা করেই এই পদ্ধতিতে আগালেও এটা কাজ করতে পারে আবার নাও পারে। যেহেতু অনেক সময়ই বুদ্ধিমান লোকের অনেক কাজই শেষ পর্যন্ত সফল হয় না। কিন্তু জোনাথন নোলান এবং ক্রিস্টোফার নোলান—এই দুই ভাই নিজেদের কাজ এবং কাজের ধরন নিয়ে এতটাই কনফিডেন্ট ও এতটাই নিশ্চিত থাকেন যে তাদের পদ্ধতি কাজ করবেই। সুতরাং, যারা ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর সাথে থাকতেছেন বা শেষ পর্যন্ত থাকবেন তাদের জন্য জোনাথন নোলানের এই পদ্ধতি কাজ করবেই। ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর মাধ্যমে তাদেরকে একটা এক্সট্রা অর্ডিনারি কাহিনীতে নিয়ে যাবেন তিনি।

ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর একেকটা পর্ব পার হচ্ছে আর ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর সত্য ঘটনা জানার আগ্রহ আরো বেশি তীব্র হচ্ছে। অথচ ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর কাহিনীতে রহস্য আরো বাড়তেছে।

চার নাম্বার পর্বে প্রোগ্রামার এলসি প্রধান প্রোগ্রামার বার্নাডকে বলে কিছু হোস্ট যে অদ্ভুত আচরণ করছে, এগুলি একটা প্যাটার্নের মধ্যে পড়ে, অথচ সে ছাড়া এখানকার সবাই নিজেদের এজেন্ডা নিয়ে ব্যস্ত, যে সেটা কেউ স্বীকার করছে না।

ডিজোন্যান্স থিওরি
বার্নাড বলে হোস্টরা প্রোগ্রামের বাইরে নিজেরা কিছুই কল্পনা করতেছে না, বরং এলসি নিজেই হোস্টদের নিয়ে এসব কল্পনা করছে।

বার্নাড এলসিকে আশ্বস্ত করে যে সমস্যা নাই। গত পর্বের বিচ্ছিন্ন হোস্টের বানানো অরিয়ন দেখিয়ে বার্নাড বলে এইটা অরিয়ন বা কালপুরুষ না, অরিয়ন বেল্টে চারটা নক্ষত্র থাকে, আর এই ডিজাইনে আছে তিনটা। বার্নাড বলে হোস্টরা প্রোগ্রামের বাইরে নিজেরা কিছুই কল্পনা করতেছে না, বরং এলসি নিজেই হোস্টদের নিয়ে এসব কল্পনা করছে।

এই পর্বে এড হ্যারিসের ক্যারেক্টার, সেই রহস্যময় লোকটাকে নিয়ে অনেকগুলি প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেছে, আবার আরো কিছু প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

অপরাধী হোস্টকে নিয়ে মেজ বা নকশার খোঁজ করতেছে এড হ্যারিস। মানুষজন বিহীন একটা এরিয়ায় শরীরের উপরের অংশে সাপের ট্যাটু আঁকানো এক মেয়ের সাথে দেখা হয় তাদের। এই মেয়েটা ইন্টারেস্টিং। শি ইজ দ্য ওম্যান উইদ অল দ্য ফায়ার। এই মেয়েটা একটা গ্রুপের লিডার। এই মেয়ের গ্রুপটার সাথে যোগ দেয় এড হ্যারিস আর তার সাথে থাকা অপরাধী হোস্ট, যার স্ত্রীকে হত্যা করেছে এড হ্যারিস।

এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, কালো কোট পরা এই রহস্যময় লোকটা ওয়েস্টওয়ার্ল্ডের কোনো হোস্ট না, সে সত্যিকারের মানুষ, হিউম্যান বিইং।

এড হ্যারিস মেয়েটাকে বলে সে মেয়েটার কথা মত জেল থেকে একজনকে ছাড়িয়ে আনবে, এর বিনিময়ে মেয়েটার শরীরে যে ট্যাটু সেটার পিছনের কাহিনী বলতে হবে তাকে।

মেয়েটা তাকে জিজ্ঞাসা করে, এইটা নিয়া তার আগ্রহ কেন?

আর তখন এড হ্যারিস যে উত্তর দেয় তাতে তার ক্যারেক্টার এবং পুরা কাহিনী নিয়ে রহস্য আরো গভীর হয়।

এড হ্যারিস আরনল্ডের কথা বলে। তিন নাম্বার পর্বে যে আরনল্ডের কথা আলোচনা করেছিলাম। এই ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর দুইজন ফাউন্ডারের একজন সেই আরনল্ড, রবার্ট ফোর্ড আর সে একসাথে এই ওয়েস্টওয়ার্ল্ড গড়ে তুলেছে।

এড হ্যারিস—দ্য ম্যান ইন ব্ল্যাক মেয়েটাকে বলে, আরনল্ড এমন একটা জগৎ তৈরি করেছে যেখানে তোমরা ইচ্ছামত সবকিছুই করতে পারবে, একটা জিনিস ছাড়া। তোমরা এখানে মরতে পারবে না। অর্থাৎ এই জগৎ যতই বাস্তবের মত মনে হোক, এটা জাস্ট একটা গেম। এরপর আরনল্ড এই ওয়েস্টওয়ার্ল্ডেই মারা যায়। আমি মনে করি, আরনল্ডের একটা স্টোরি বলা বাকি ছিল।

এড হ্যারিস—দ্য ম্যান ইন দ্য ব্ল্যাক মেয়েটাকে আরো বলে, তুমি বলতে পারো আরনল্ডের সেই উত্তরাধিকারকে সম্মান জানানোর জন্যই আমি এখানে আসছি। আর আমি মনে করি, তোমার ট্যাটু এই পাজলের পরবর্তী অংশ।

মানুষজন বিহীন একটা এরিয়ায় শরীরের উপরের অংশে সাপের ট্যাটু আঁকানো এক মেয়ের সাথে দেখা হয় তাদের।… হেক্টরকে জেল থেকে ছাড়িয়ে আনার পরে শরীরে সাপের ট্যাটু আঁকানো সেই মেয়েটা এড হ্যারিসকে ট্যাটুর পিছনের গল্প বলে।

অডিয়েন্স হিসেবে আমি এমনকি পুরা পাজলটাও দেখতে পারতেছি না। শুধু পাজলের একটা অস্পষ্ট শেইপ দেখতে পারতেছি।

এড হ্যারিসের সাথে আরনল্ডের কী সম্পর্ক? আরনল্ডের সেই উত্তরাধিকারটা কী? মেয়েটার শরীরের এই ট্যাটু কোন পাজলের অংশ—এই প্রশ্নগুলি সহ আরো অনেক অনেক প্রশ্নের জন্য ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর সামনের পর্বগুলি ছাড়া আর কোনো উপায় নাই।

এই সম্ভাবনাও আছে যে এড হ্যারিসের ক্যারেক্টারের উদ্দেশ্য হল ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর হোস্টদেরকে এই পার্কে সিনথেটিক স্ট্যাটিক হিউম্যান হিসাবে না রেখে তাদেরকে আসল অর্থাৎ ডাইন্যামিক হিউম্যান বিইং এর মত মুক্ত করে দেওয়া। এটা আমার মনে হয়েছে। কারণ, এড হ্যারিস সেই অপরাধী হোস্ট লরেন্সকে এক সময় বলে, হোয়াট ইফ আই টোল্ড ইউ আই অ্যাম হিয়ার টু সেট ইউ ফ্রি?

এই সম্ভাবনাও আছে যে এড হ্যারিসের ক্যারেক্টারের উদ্দেশ্য হল ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর হোস্টদেরকে এই পার্কে সিনথেটিক স্ট্যাটিক হিউম্যান হিসাবে না রেখে তাদেরকে আসল অর্থাৎ ডাইন্যামিক হিউম্যান বিইং এর মত মুক্ত করে দেওয়া। এটা আমার মনে হয়েছে।

হেক্টরকে জেল থেকে ছাড়িয়ে আনার পরে শরীরে সাপের ট্যাটু আঁকানো সেই মেয়েটা এড হ্যারিসকে ট্যাটুর পিছনের গল্প বলে।

মেয়েটার বয়স যখন সাত বছর, একদল মুখোশ পড়া মানুষ তাদের শহরে আসে। তারা শহরের সবাইকে হত্যা করে। তার মাকে শরীরের মাঝখানে চিড়ে ফেলে তারা। নিজেকে মৃত দেখানোর জন্য তার মায়ের রক্ত নিজের শরীরে মাখিয়ে নেয় মেয়েটা। এরপরে, বড় হয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য সে যতজনকেই তাড়া করেছে, তাদের প্রত্যেকের রক্ত দিয়ে শরীরে সেই ট্যাটু এঁকেছে।

এড হ্যারিস বলে, শুধু একজন মানুষ বাকি আছে—সেই কারণে ট্যাটুতে সাপের মাথাটা এখনো আঁকা হয় নি। তার নাম কী?

মেয়েটা উত্তর দেয়, সে অনেকগুলি নামে পরিচিত। সবচেয়ে বেশি পরিচিত নাম ওয়ায়েত।

অর্থাৎ, গত পর্বে যে ওয়ায়েতের কথা শুরু হয়েছিল। যে ওয়ায়েত বলত সে ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর শুনতে পেরেছে।

এড হ্যারিসের ক্যারেক্টারের ব্যাপারে আমার মনে হয়, সে যেহেতু ত্রিশ বছর ধরে, মানে ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর শুরু থেকেই এখানে আসছে, কোনো একটা পয়েন্টে এই জায়গার সাথে তার ইমোশোনাল এবং সাইকোলজিক্যাল সম্পর্ক আছে। এখানে হয়ত এমন কিছু ঘটেছে যেটা তার জীবনে খুব বড় একটা প্রভাব ফেলেছে। এই কারণে বাইরের জগতে সে স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করতে পারেনি। সম্ভবত তার এই সকল কাজকর্মের পিছনে খুব গুরুত্বপূর্ণ কারণ আছে।

এড হ্যারিস—দ্য ম্যান ইন দ্য ব্ল্যাক বলে, পুরা পৃথিবীটাই একটা স্টোরি। আমি এই গল্পের প্রতিটা পৃষ্ঠাই পড়ছি, শুধু শেষের পৃষ্ঠা বাদ আছে। এটা কীভাবে শেষ হয় আমাকে তা জানতে হবে। আই ওয়ান্ট টু নো হোয়াট দিস অল মিনস—এই সবকিছুর অর্থ কী আমি সেটা জানতে চাই।

ডিজোন্যান্স থিওরি
ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর চার নাম্বার পর্বের আরেকটা উল্লেখযোগ্য ব্যাপার—ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর হোস্ট, প্রস্টিটিউট মেইভের হঠাৎ করে ঝাপসা কিছু একটা মনে আসে।… মেইভ রাস্তায় এ রকম চেহারার একটা মূর্তিও কুড়িয়ে পায়।

ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর চার নাম্বার পর্বের আরেকটা উল্লেখযোগ্য ব্যাপার—ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর হোস্ট, প্রস্টিটিউট মেইভের হঠাৎ করে ঝাপসা কিছু একটা মনে আসে। সারা শরীর ঢাকা, হেলমেট পড়া, অ্যাস্ট্রোনাটদের মত পোশাক পড়া ফিগার। আসল ঘটনা হল হোস্টরা মারা যাওয়ার পরে, ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর পাওয়ার অফ করে এরা হোস্টদেরকে ল্যাবরেটরিতে নিয়ে যাওয়ার জন্য আসে। সেখান থেকে হোস্টদেরকে আবার প্রোগ্রাম রিস্টার্ট করে ফেরত পাঠানো হয় ওয়েস্টওয়ার্ল্ডে। তারা যেহেতু হোস্টরা মারা যাওয়ার পরে এখানে আসে, হোস্টদের তাদের দেখার কথা না, সুতরাং মেইভেরও মনে পড়ার কথা না। মেইভ রাস্তায় এ রকম চেহারার একটা মূর্তিও কুড়িয়ে পায়। সে জানতে পারে এই মূর্তিটা আসলে একটা নির্দিষ্ট কমিউনিটির ধর্ম বা রিলিজিয়নের অংশ।

পরে মেইভ যখন হেক্টরকে জিজ্ঞেস করে এই হেলমেট পরা ফিগারগুলি কে? হেক্টর মেইভকে বলে, ম্যান বিটুইন ওয়ার্ল্ডস—দুইটা জগতে আসা-যাওয়া করে তারা, আমাদের জগতের ওপর নজরদারি করার জন্য এই সত্তাগুলিকে পরকাল থেকে পাঠানো হয়।

এটা আসলে আমাদের খুব পরিচিত একটা ধারণা বা বিশ্বাসের এক ধরনের সায়েন্টিফিক হাইপোথিসিস। স্পষ্ট করলাম না। বুদ্ধিমানদের বুঝতে পারার কথা।

এই পর্বের সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং জায়গা হল, থেরেসা আর রবার্ট ফোর্ডের কনভার্সেশন। রবার্ট ফোর্ড মানে অ্যান্থনি হপকিন্স। অ্যান্থনি হপকিন্স কত বয়স্ক হয়ে গেছেন! কিন্তু হপকিন্সের আগের সেই ভয়েস, কথা বলার বুদ্ধিদীপ্ত স্টাইল, সাইকোলজিক্যালি ডমিনেটিং মেজাজ সব কিছুই আগের মত একই আছে। মনে হয় খুব পরিচিত একজনকে দেখছি।

থেরেসা রবার্ট ফোর্ডের সাথে মিটিং করতে যায় কারণ সে মনে করে রবার্ট ফোর্ড ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর স্টোরিলাইনগুলি নিয়ে ক্যাওস তৈরি করছে। থেরেসা খুব প্রিপারেশন নিয়ে যায় যে রবার্ট ফোর্ড যাতে মনে করে সে খুব কনফিডেন্ট। সে যে নার্ভাস এটা যেন রবার্ট ফোর্ড বুঝতে না পারে।

ডিজোন্যান্স থিওরি
ফোর্ড বলে, ইন হিয়ার উই ওয়্যার গডস, অ্যান্ড ইউ ওয়্যার মেয়ারলি আওয়ার গেস্টস

কিন্তু রবার্ট ফোর্ড যে ভঙ্গিতে থেরেসার সাথে কথা শুরু করে তাতে বোঝা যায় ফোর্ডের মত একজন প্রচণ্ড বুদ্ধিমান ব্যক্তিত্বের সামনে যাওয়ার ব্যাপারে থেরেসার চিরদিনই নার্ভাস থাকার কথা। এবং থেরেসার এই কনফিডেন্সের প্রিপারেশন কোনোদিনই কাজ করবে না।

রবার্ট ফোর্ড থেরেসাকে বলে, আরনল্ড তাকে বলেছিল গেস্ট এবং থেরেসার মত বহিরাগতদের যাতে এই ওয়েস্টওয়ার্ল্ডে ফোর্ড ঢুকতে না দেয়। আরনল্ড হোস্টদের প্রেফার করত।

ফোর্ড বলে সে আরনল্ডকে বলেছিল যে এতে সমস্যা হবে না। বাইরের লোক মনে করবে এটা একটা থিম পার্ক বা বিজনেস ভেন্চার। তারা বুঝতে পারবে না এটা একটা এন্টায়ার ওয়ার্ল্ড, একটা সম্পূর্ণ জগৎ।

এই দৃশ্যটা অসাধারণ। ফোর্ডের ইশারায় আশেপাশের সব হোস্ট ফ্রিজ হয়ে যায়, একেবারে থেমে যায়। ফোর্ড কথা বলতে থাকে। ফোর্ড বলে এখানের প্রতিটা ঘাসের ডগাও আমরা ডিজাইন করেছি। থেরেসা প্রচণ্ড নার্ভাস হয়ে যায়। ফোর্ড বলে, ইন হিয়ার উই ওয়্যার গডস, অ্যান্ড ইউ ওয়্যার মেয়ারলি আওয়ার গেস্টস।

ফোর্ড বলে, সে আরনল্ডের মত না, সে খুব ক্লিয়ারলি সবকিছু দেখেছে। ফোর্ড থেরেসাকে সাবধান করে দেয় যে তার পথে কেউ যেন বাঁধা হয়ে না দাঁড়ায়। থেরেসার হাত কাঁপতে থাকে।

আর রবার্ট ফোর্ডের ইশারায় মৃদু ভূমিকম্প শুরু হয়। ফোর্ড হেসে বলে, আই অ্যাম নট দ্য সেন্টিমেন্টাল টাইপ।

ওয়েস্টওয়ার্ল্ড এর রিয়ালিটির সাথে মিলে যায় এমন একটি কথা দিয়ে এই লেখা শেষ করি।

ফর এ ফিউ মোমেন্টস, দ্য সিক্রেটস অব দ্য ইউনিভার্স আর ওপেনড টু আস। লাইফ ইজ এ চিপ পার্লার ট্রিক। দ্যাট’স দ্য মিজারেবল ট্রুথ।—কিছু মুহূর্তের জন্য এই মহাবিশ্বের গোপন সত্যটি আমাদের কাছে প্রকাশিত হয়ে পড়ে। জীবন হল নির্ধারিত একটা সস্তা কৌশল। এটাই করুণ সত্য।

এই কথাটা কে কোথায় বলেছেন সেটা নেক্সট পর্বে বলব।

(পর্ব ৫)