এখানে ১৫টি ভুল অভ্যাসের কথা বলা হলো এই অভ্যাসগুলি ধীরে ধীরে আপনার ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দিতে পারে।
১. আপনি কোম্পানির সিস্টেমের সাথে নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারেন না
প্রত্যেক কাজের জায়গারই নিজস্ব সিস্টেম বা ধরন আছে। আপনি যদি এসব সিস্টেম পছন্দ না করেন বা এসব ব্যাপারে জাজমেন্টাল থাকেন তাহলে আপনার সহকর্মীরা ভাববে আপনি অফিসে সবার সাথে পজিটিভ সম্পর্ক রাখতে চান না।
২. আপনি অজুহাত তৈরি করেন
আপনার ভুল এবং ব্যর্থতার দায়িত্ব আপনার। আপনাকে ব্যাখ্যা করতে হবে আপনি কেন পিছিয়ে আছেন। উদাহারণ হিসাবে, আপনার বসকে বলতে পারেন আপনি সময় ঠিকভাবে ম্যানেজ করতে পারেন নি।
৩. আপনি ন্যূনতম কাজ করেন
আপনি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আপনার কাজ শেষ করলে বা কাজের ব্যাপারে সর্বোচ্চ কোয়ালিটি মেইনটেইন করলেও অাপনি যখন ন্যূনতম কাজ করেন সেটা আপনার জন্য খারাপ। আপনাকে দেখাতে হবে আপনি সবসময় বেশি কাজ করার চেষ্টা করছেন, তাহলে আপনার বস ভাববে আপনি কোম্পানিতে আপনার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করেন।
৪. আপনি আপনার কথা রাখেন না
আপনি কমিটমেন্ট রাখতে যখন ব্যর্থ হন তখন আপনার সম্পর্কে অন্যের ধারণা হয় আপনি নির্ভরযোগ্য না। যত ছোট বা অগুরুত্বপূর্ণ কাজই হোক না কেন, আপনি মনে রাখলে বা ঠিকঠাক মত কাজ শেষ করলে কর্তৃপক্ষ ভাববে আপনাকে আরো বেশি দায়িত্ব দেয়া যাবে এবং আপনার উপর আস্থা রাখা যাবে।
৫. আপনি অমার্জিত পোশাক পরেন
আপনি কর্মক্ষেত্রে অমার্জিত পোশাক পরলে বা পোশাকের ব্যাপারে পরিপাটি না থাকলে কর্তৃপক্ষ ভাববে আপনি কাউকে পরোয়া করেন না। আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা তখন তাদের কাছে কমে যায়।
৬. আপনি হতাশ মনোভাবের
আপনার হতাশার অভ্যাস থাকলে আপনি বসের কাছে একটি উপদ্রব হিসেবে বিবেচিত হবেন। কারো সম্পর্কে অভিযোগ বা ঘ্যানঘ্যান করার স্বভাব থাকলে আপনার বস বিরক্ত হবেন এবং বেশিদিন আপনাকে চাকরিতে রাখার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন।
৭. আপনি আপনার সহকর্মীদের অবজ্ঞা করেন
উচ্চতর কর্তৃপক্ষের সাথে সম্পর্ক ভালো রাখার মত সমান গুরুত্বপূর্ণ সহকর্মীদের সাথে সম্পর্ক ভালো রাখা। সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রাখলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাবেন যেগুলি আপনার কাজের জন্য সহায়ক হবে।
৮. আপনি আত্মরক্ষামূলক
আপনার বস বা কর্তৃপক্ষ আশা করে না আপনি সব কাজে পারফেক্ট হবেন। কিন্তু সবসময় নিজেকে রক্ষা করতে চাওয়া বা সমালোচনাবিহীন থাকতে চাওয়া আপনার অপেশাদার মনোভাবের পরিচয় দেয়। আপনি যদি গঠনমূলক সমালোচনা শুনতে পছন্দ না করেন এর অর্থ দাঁড়াবে আপনি উন্নতি করতে চান না।
৯. আপনি গড়িমসি করেন
আপনি যদি একেবারে শেষ মুহূর্তে কাজ সম্পন্ন করেন তা শুধু আপনার একার জন্য চাপের ব্যাপার না। আপনার সাথে সম্পর্কিত সবার উপরেই সে চাপ পড়ে। যদি সেক্ষেত্রে খারাপ কিছু হয় তাহলে সবার আগে আপনার উপরই দোষ আসবে।
১০. আপনি বাজে ইমেইল লেখেন
আপনি ব্যক্তিগতভাবে যত বন্ধুভাবাপন্ন মানুষই হোন না কেন, আপনার সংক্ষিপ্ত বা চাঁছাছোলা ভাষার ইমেইল থেকে ভুল বোঝার সুযোগ থাকে বা অন্য মানে বোঝা যেতে পারে। আপনি যদি সচেতন ইচ্ছাতেও না করেন, তবু কড়া ভাষার ইমেইল অফিসে আপনার সুনাম নষ্ট করে। এর ফলে সবাই আপনাকে এড়িয়ে চলবে।
১১. আপনার কাজ অর্থপূর্ণ কোনো অবদান রাখে না
কোনো মিটিংয়ে শুধু কথা বলার জন্য কিছু বলা প্রোডাক্টিভ কিছু দাঁড় করায় না। কোনো আইডিয়া শেয়ার করার ক্ষেত্রে আইডিয়ার পরিমাণের চেয়ে কোয়ালিটিকে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে।
১২. আপনি সবসময় দেরি করেন
সবসময় দেরি করলে সহকর্মীরা ভাববে আপনার কাছে অন্য কিছু প্রফেশনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ, এবং আপনি তাদের সময়কে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এর ফলে তারা ভাববে আপনি তাদেরকে সম্মান করেন না এবং তাদের ব্যাপারে অমনোযোগী। তখন আপনার প্রতি কেউ কোনো আস্থা পাবে না। সময়ের প্রতি সচেতন হওয়ার চেষ্টা করুন ।
১৩. আপনি বেশি কথা বলেন
আপনার সহকর্মীদেরকে জানা বা বোঝার দরকার রয়েছে ঠিকই। কিন্তু আপনি যদি অতিরিক্ত সোশ্যালাইজিং করেন তাহলে অন্যদের কাজে বিঘ্ন ঘটবে। লাঞ্চ আওয়ারে বা ফ্রি সময়ে অন্যদের সাথে বাইরের বিষয় নিয়ে কথা বলুন। অন্যদের কাজে বিঘ্ন ঘটালে কেউ আপনার সাথে কাজ করতে চাইবে না।
১৪. আপনি ই-মেইল অবহেলা করেন
সঠিক সময়ের মধ্যে ই-মেইলের জবাব দিতে না পারলে যারা উত্তর আশা করে তারা হতাশ হয়। সহকর্মীরা ভাবে আপনি সময়কে গুরুত্ব দেন না। এতে ধারণা তৈরি হয় আপনি অপেশাদার। সবসময় মেইলের জবাব সঠিক সময়ে দিলে আপনার কর্মদক্ষতা সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা তৈরি হয় অন্যদের মনে।
১৫. আপনি রূঢ় আচরণ করেন
কাজ ভালো করলেও অন্য সহকর্মীরা যদি আপনার সাথে কাজ করতে না চায়, তবে আপনার ভালো কাজের কোনো অর্থ থাকে না। অমার্জিত আচরণ করলে শুধু সহকর্মীরাই নয় কর্তৃপক্ষও আপনার উপর বিরক্ত হয়। আপনার মনে রাখা উচিৎ মার্জিত হওয়া অন্যদের মন জয় করার চাবিকাঠি।