খোলা মন হলো মূল্যবান একটা সম্পদ। যখন আপনি নতুন সম্ভাবনায় আগ্রহী হন এবং সৃজনশীলভাবে চিন্তা করতে পারেন, তখন আপনার নিজের ভূমিকায় সক্রিয়ভাবে কাজ করার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ফলে যেকোনো প্রতিযোগিতায় আপনার দল বা প্রতিষ্ঠান এক ধাপ এগিয়ে থাকে।

কখনো কখনো একটা প্রকল্পের সাফল্য কেবল ছোট পরিবর্তন বা এগিয়ে যাওয়ার নতুন উপায় সংক্রান্ত পরামর্শের উপর নির্ভর করে না। কাউকে না কাউকে একটা বড়, ব্যতিক্রমী, এবং উদ্ভাবনী আইডিয়া নিয়ে হাজির হতে হয়।

নতুনভাবে চিন্তাভাবনার ক্ষমতা 

সৃজনশীল হওয়ার জন্য আপনাকে “শৈল্পিক” হতে হবে না। সৃজনশীল পন্থা অবলম্বন করে এবং চিন্তাভাবনার শ্রেষ্ঠ পদ্ধতিগুলি প্রয়োগ করে যে কেউই সাহসী এবং যুগান্তকারী আইডিয়া তৈরি করা শিখতে পারে। নতুন আইডিয়া তৈরির জন্য ৩টি মূল পন্থা রয়েছে:

  • পুরনো চিন্তার ধরন ভেঙে ফেলা
  • নতুন সংযোগ তৈরি করা
  • নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা

এই লেখায় প্রথমে এই ৩টি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে। এরপর ৫টি উপায় তুলে ধরা হবে সৃজনশীল চিন্তার বিকাশের জন্য সবচেয়ে ভালো পরিবেশ গড়ে তোলা বিষয়ে।

১. পুরনো চিন্তার ধরন ভেঙে ফেলা
আমরা সবাই চিন্তার নির্দিষ্ট “ট্র্যাক” বা ধরনে আটকে যেতে পারি। এগুলি এত আরামদায়ক হতে পারে যে, আমরা বুঝতেও পারি না এগুলি আমাদেরকে সামনে আগাতে দিচ্ছে না। সুতরাং, নতুন আইডিয়া পেতে হলে আমাদের চিন্তার প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতি থেকে দূরে সরে যেতে হবে এবং সামনে নতুন পথ দেখা শুরু করতে হবে।

এটি করার কিছু সেরা উপায় হলো:

# নিজের ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করুন

প্রতিটি পরিস্থিতিতে আপনি সম্ভবত একাধিক অনুমান নির্ভর ধারণা গ্রহণ করে থাকেন। এদের মধ্যে অনেকগুলিই হয়তো সত্য হতে পারে। কিন্তু আপনার পূর্ব ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করলে অনেক রোমাঞ্চকর সম্ভাবনাও আপনার সামনে উন্মুক্ত হবে।

যেমন, হয়তো আপনি আপনার হোম অফিসকে আরো বড় করতে চান। আপনি জানেন যে, এটা একটা ভালো বিনিয়োগ। কিন্তু আপনি ধারণাটি অনুসরণ করছেন না। কারণ আপনি ধরে নিয়েছেন যে, এর ব্যয়ভার আপনি বহন করতে পারবেন না।

এই ধারণাটিকে চ্যালেঞ্জ করুন! এই মুহূর্তে আপনার ব্যাংকে টাকা নাও থাকতে পারে। কিন্তু নগদ অর্থ সংগ্রহের জন্য আপনি হয়তো অন্যান্য কিছু সম্পদ বিক্রি করতে পারবেন। আপনি ঋণ গ্রহণ করতে পারেন এবং পেমেন্ট করার জন্যে অতিরিক্ত সময় কাজ করতে পারেন।

# সমস্যাটি নতুনভাবে মূল্যায়ন করুন 

আপনি যেভাবে আপনার সমস্যাকে সংজ্ঞায়িত করেন বা দেখেন, তা আপনার সৃজনশীলতাকে সীমাবদ্ধ করতে পারে। যদি সমস্যাটিকে ভিন্নভাবে বর্ণনা করেন বা ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেন, তাহলে নতুন সমাধান বেরিয়ে আসতে পারে।

যেমন, যখন উবারের প্রতিষ্ঠাতা গ্যারেট ক্যাম্প একটি পরিবহন সেবা চালু করার চিন্তা করছিলেন, তখন তিনি মুনাফা অর্জনের জন্য শুধুমাত্র পর্যাপ্ত যানবাহন কেনা এবং সেগুলি পরিচালনার দিকে মনোনিবেশ করতে পারতেন। তার বদলে তিনি যাত্রীদের চাহিদা পূরণের জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় কী হতে পারে, তার পরিপ্রেক্ষিতে সমস্যাটি পুনর্বিবেচনা করেছিলেন। ফলে একটি বিশাল গাড়ির বহরের পরিবর্তে তিনি নিয়ে আসেন একটি শক্তিশালী অ্যাপ। ফলে নতুন একটি উদ্ভাবনী ব্যবসার জন্ম হয়।

# ভিন্নভাবে চিন্তা করুন

যদি আপনি একটি নতুন পদ্ধতির কথা ভাবতে অসুবিধা বোধ করেন, তাহলে সমস্যাটিকে সম্পূর্ণ বিপরীত দিক থেকে দেখুন।

অর্থাৎ, প্রশ্নটি উল্টে দিন এবং আপনি যা অর্জন করতে চান, তার ঠিক বিপরীত দিকটি খুঁজে দেখুন। এটি আপনার সামনে আসল সমস্যা মোকাবেলার জন্য উদ্ভাবনী উপায় নিয়ে আসতে পারে।

যেমন, আপনার ওয়েবসাইটের জন্য একটি নতুন ডিজাইন করার সময় সবচেয়ে খারাপ ডিজাইনটি কী হতে পারে, সে সম্পর্কে চিন্তা করুন।

এটিকে বিরক্তিকর, একঘেয়ে এবং অনাকর্ষণীয় করতে গিয়ে আপনি হয়তো ঠিক এর বিপরীতটা করার জন্যে কিছু দুর্দান্ত আইডিয়া বের করে ফেলতে পারেন।

# বিভিন্ন মিডিয়ার মিশ্রণ ঘটান 

অস্বাভাবিক উপায়ে সমস্যা মোকাবেলা করতে গেলে অনেক সময় ব্যতিক্রমী আইডিয়া উঠে আসতে পারে। এটি করার একটি দুর্দান্ত উপায় হলো বিভিন্ন ধরনের সৃজনশীলতা প্রয়োগ করা। যেমন, আপনার পরিকল্পনা সম্পর্কে শুধু বলবেন না বা লিখবেন না। এগুলিকে সঙ্গীত, চিত্রকলা, ফটোগ্রাফি, কিংবা ভাস্কর্যের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করুন, যাতে আপনি নিজেকে আরো ভালভাবে প্রকাশ করতে পারেন। আপনার সৃজনশীলতাকে উন্মুক্ত করলে সহজেই নতুন চিন্তাভাবনা উঠে আসতে পারে।

যেমন, ইন্টেরিয়র ডিজাইনাররা প্রায়ই কাপড়ের টুকরো, রঙের পোঁচ, ফটোগ্রাফ, স্কেচ, টাইপফেস বা এমনকি ছোট বস্তু দিয়ে তৈরি “মুড বোর্ড” তৈরি করেন। এই প্রক্রিয়াটি অরিজিনাল বা মূল নকশা তৈরি করতে পারে, যা অন্যথায় তাদের মাথায় আসতো না।

২. নতুন সংযোগ তৈরি করা
নতুন আইডিয়া তৈরি করার আরেকটি উপায় হলো নতুন এবং অপ্রত্যাশিত সংযোগ তৈরি করা। কিছু সেরা আইডিয়া প্রায় ‘বাই চান্স’ বা হঠাৎ করে মাথায় আসে বলে মনে হয়। হয়তো আপনি যে সমস্যাটি সমাধান করার চেষ্টা করছেন, তার সাথে সম্পর্কহীন কোনো কিছু দেখতে বা শুনতে পান এবং আচমকা আপনার মাথায় নতুন একটা আইডিয়া আসে।

যেমন, উদ্ভাবক জর্জ দে মেস্ত্রাল বর্তমানে বহুল ব্যবহৃত ভেলক্রো টেপ উদ্ভাবন করেন। এই টেপ জুতা বা ব্যাগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পণ্যে ব্যবহৃত হয়। আর এই টেপ উদ্ভাবনের জন্যে তিনি একধরনের আগাছা কাঁটাঘাস থেকে অনুপ্রেরণা পান। একবার পাহাড়ে হাঁটতে যাওয়ার সময় তার কুকুরের পশমে ‘বার্ডক’ নামের এই উদ্ভিদ বার বার আটকে যাচ্ছিল। আর সেখান থেকেই তিনি ভেলক্রো টেপ তৈরির কথা ভাবেন।

আবার, জিম্বাবুয়ের স্থপতি মিক পিয়ার্স উইপোকার ঢিবি থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে বিশাল একটি স্থাপনার নকশা করেন, যাতে কোনো এয়ার কন্ডিশন বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার প্রয়োজন হয় না। জিম্বাবুয়ের রাজধানী হারারেতে অবস্থিত ইস্টগেট সেন্টার হলো তার নির্মিত স্থাপনা। বিশাল এই স্থাপনায় কোনো ধরনের  শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রাখা হয়নি। কিন্তু তারপরও উইপোকার ঢিবির মতো এই স্থাপনায় বাতাসের চলাচল ঠিক থাকে।

সৃজনশীল সংযোগ স্থাপনের জন্য নিচের কিছু কৌশল অবলম্বন করতে পারেন:

প্রথম কৌশলটি হলো ‘র‍্যানডম ওয়ার্ডস’। চিন্তা ভাবনা ছাড়াই যেকোনো একটি শব্দ নিন। তারপরে সেই শব্দ এবং আপনার সমস্যার মধ্যে সম্বন্ধ খুঁজে বের করুন। মনে করুন, আপনি চাইছেন আপনার প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের অসুস্থতা জনিত ছুটি কমিয়ে আনতে। আর ওপরের নিয়ম অনুসারে আপনি ‘বল’ শব্দটি নিয়েছেন। এখন, আপনার মাথায় হয়তো প্রতিমাসে অন্তত একবার কোনো স্পোর্টস ইভেন্ট আয়োজনের আইডিয়া আসতে পারে, যা আপনার প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের নিয়মানুবর্তী হতে ও সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে।

আরেকটি পদ্ধতি হলো ‘পিকচার প্রম্পটস’। সৃজনশীল চিন্তাকে অনুপ্রাণিত করার জন্য ছবি একটি দুর্দান্ত মাধ্যম হতে পারে। যেকোনো একটি ছবি বেছে নিন এবং আপনার সমস্যার সাথে এর সংযোগ স্থাপন করুন। পর্যবেক্ষণ করে দেখুন কোনো নতুন সম্ভাবনা বের হয়ে আসছে কি না। যেমন, একটি বিশাল গাছের ছবি হয়তো আপনার প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন দল ও শাখাকে নতুনভাবে সাজানোর জন্যে অনুপ্রাণিত করবে।

আরেকটি কৌশলের নাম হলো ‘অবজেক্টস অব ইন্টারেস্ট’। এই কৌশল প্রয়োগ করতে আপনার প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের বলুন পরবর্তী মিটিং-এ প্রত্যেকেরই পছন্দের কোনো একটি ছোট বস্তু নিয়ে আসার জন্যে। এই বস্তুটি সম্পর্কে প্রশ্ন করার মাধ্যমে আপনি নতুন কোনো আইডিয়া তৈরি করতে পারেন। আপনি জিজ্ঞেস করতে পারেন, “আমরা যে সমস্যাটি সমাধান করতে চাইছি, তার সাথে এই বস্তুটি কীভাবে সম্পর্কিত?” কিংবা, “আমাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্যে এই বস্তুটি আমরা কীভাবে ব্যবহার করতে পারি?”

যেমন, একটি স্ট্যাপলার দেখে আপনার মনে হতে পারে যে, আপনার দলের সদস্যদের মধ্যে সংযোগের অভাব রয়েছে। ফলে আপনি হয়ত নতুন একটি উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন, যা সবার মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধি করবে।

৩. নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা
অবশেষে, আপনার সাধারণ দৃষ্টিকোণ থেকে সরে এসে এবং নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের মাধ্যমে আপনি আপনার চিন্তাভাবনার গতিশীলতা বৃদ্ধি করতে পারেন।

সম্পূর্ণ ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন একজন ব্যক্তির সাথে কথা বলার সময় কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়কে আপনি হয়ত নতুনভাবে অনুধাবন করতে শুরু করবেন। অপর ব্যক্তিটির এই ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির উৎস হতে পারে তার বয়স, জীবনের অভিজ্ঞতা কিংবা তার ভিন্ন ধরনের সংস্কৃতিতে বেড়ে ওঠা।

অথবা, “ইফ আই ওয়্যার” বা “আমি যদি এমন হতাম” ধরনের গেইম খেলতে পারেন। নিজেকে জিজ্ঞেস করুন “আমি যদি এমন হতাম” তাহলে এই চ্যালেঞ্জটি কীভাবে সামাল দিতাম।

এই খেলায় আপনি যা ইচ্ছে তাই হতে পারেন। আপনি ক্রীড়াবিদ, সফল উদ্যোক্তা, রাজনীতিবিদ বা অন্য যেকোনো রূপে নিজেকে কল্পনা করতে পারেন। ভেবে দেখুন আপনি যে মানুষটিকে কল্পনা করছেন তিনি সমস্যাটি কীভাবে সমাধান করার চেষ্টা করতেন। আর খেয়াল করুন যে, এর থেকে আপনি নতুন কোনো আইডিয়া পাচ্ছেন কিনা। এই ব্যক্তিটির স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যগুলি চিহ্নিত করুন এবং সমস্যা সমাধানে এগুলিকে কাজে লাগান। যেমন, একজন উদ্যোক্তা বড় ধরনের রিস্ক নিতে পারেন। আবার একজন ক্রীড়াবিদ প্রচুর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সাফল্য অর্জনের চেষ্টা করেন।

সৃজনশীল চিন্তাভাবনায় এগিয়ে যাওয়ার ৫ উপায়
আমরা এতক্ষণ যেসব কৌশল নিয়ে আলোচনা করলাম, সেগুলি সবচেয়ে ভালো কাজ করে ইতিবাচক ও সম্ভাবনাময় পরিবেশে। অন্যদিকে এবার আলোচনা করা আইডিয়াগুলি সৃজনশীলতার জন্য সবচেয়ে ভালো পরিবেশ সৃষ্টিতে সাহায্য করবে:

১. নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন। বিশ্বাস রাখুন যে, ভালো আইডিয়া আসবেই। নিজের আত্মবিশ্বাসকে সতেজ রাখার জন্যে নতুন বিষয় কল্পনা করা বা যেকোনো পরিস্থিতে ভালো সম্ভাবনা নিয়ে চিন্তা করার মতো কৌশলগুলি অনুসরণ করুন।

২. অবসরের জন্য সময় বের করুন। অনেক ভালো ভালো আইডিয়া আপনার মাথায় আসতে পারে যখন আপনি অন্য কিছু নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। অথবা যখন আপনি আসলে তেমন কিছুই চিন্তা করছেন না, তখনও নতুন আইডিয়া আসতে পারে। যেমন গান শোনার সময় বা আপনার বাচ্চাদের সাথে খেলা করার সময়।

৩. বিশ্রাম ও ঘুম আপনার সৃজনশীলতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে খেয়াল রাখবেন আপনার হাতের কাছে নোটপ্যাড বা অন্য কোনো ডিভাইস যেন থাকে, যাতে আপনি আপনার অসাধারণ আইডিয়াগুলি তাতে লিখে রাখতে পারেন।

৪. পরিবেশ পাল্টান। জায়গা বদল করলে আপনার চিন্তায় পরিবর্তন আসতে পারে এবং নতুনভাবে অনুপ্রাণিত হতে পারেন। ইতিমধ্যেই উদ্ভাবক জর্জ দে মেস্ট্রাল কীভাবে হাঁটতে বের হয়ে তার উদ্ভাবনের জন্যে আইডিয়া পেয়েছিলেন, তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

আপনার অফিসের কনফারেন্স রুমের বদলে পাশের কোনো কফি শপে মিটিং-এর আয়োজন করুন। অথবা সবাইকে নিয়ে আইডিয়ার সন্ধানে পার্কে ঘুরে আসতে পারেন।

৫. বাধা কমিয়ে আনুন। যখন আপনি আইডিয়া জেনারেট করছেন, তখন শুধুমাত্র এই কাজেই মনোযোগ দিন। এমন একটি জায়গায় বসে চিন্তা করুন, যেখানে কাজ করা সহজ ও আনন্দদায়ক। ফোন ও ল্যাপটপ থেকে দূরে থাকুন। এবং ঘরের দরজা বন্ধ রাখুন, যেন কেউ আপনার চিন্তার গতিকে বাধাপ্রাপ্ত করতে না পারে।

৬. আনন্দে থাকুন। আনন্দ ও হাস্যরস সৃজনশীলতার জন্যে অনেক প্রয়োজনীয় উপাদান, বিশেষ করে যখন আপনি দলের সাথে একত্রে নতুন আইডিয়ার সন্ধান করছেন। যখন মৌলিক কোনো কিছু খুঁজে বের করার চাপে থাকেন, তখন খেয়াল রাখবেন যেন আপনি নিরুদ্বেগ থাকেন এবং সবচেয়ে ভালো আইডিয়াগুলি গ্রহণের জন্য আপনার মন খোলা থাকে।

মূল পয়েন্ট সমূহ

বিভিন্ন কাজে ও কারণে সৃজনশীলতা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু মাঝেমধ্যে জটিল কোনো সমস্যা সমাধানের জন্যে বা নতুন কোন কাজ শুরু করার জন্যে আপনার প্রয়োজন বিশেষ কোনো আইডিয়ার।

মনে রাখতে হবে যে, যে কেউই চাইলে সৃজনশীল হয়ে উঠতে পারে। আর আপনি আপনার উদ্ভাবনী চিন্তা জাগ্রত করার ক্ষমতাকে আরো উন্নত করতে পারেন। এর জন্যে মূল কৌশলগুলি হলো:

১. চিন্তাভাবনার পুরানো ধরন থেকে মুক্ত হোন। আপনি আপনার অনুমানকে চ্যালেঞ্জ করার মাধ্যমে, সমস্যাকে নতুনভাবে ব্যাখ্যা করার মাধ্যমে, বিভিন্ন মিডিয়ার সংমিশ্রণ ঘটিয়ে বা বিপরীত দিক থেকে চিন্তা করার মাধ্যমে এই কাজটি করতে পারেন।

২. নতুন সংযোগ সৃষ্টি করুন। ‘র‍্যানডম ওয়ার্ড’, ‘পিকচার প্রম্পটস’, অথবা ‘অবজেক্টস অফ ইন্টারেস্ট’ এর মতো কৌশল ব্যবহার করে আপনার মনকে নতুন সংযোগ সৃষ্টির জন্য বাধ্য করতে পারেন।

৩. নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে সমস্যা বোঝার চেষ্টা করুন। বিভিন্ন ধরনের ও দৃষ্টিভঙ্গির মানুষের সাথে কথা বলে দেখুন। এবং “ইফ আই ওয়্যার” বা “আমি যদি এমন হতাম” গেইমটি খেলে দেখুন।

এই কৌশলগুলির পাশাপাশি আত্মবিশ্বাস বাড়ানো, অবসর খুঁজে নেয়া বা পরিবেশ বদলের মতো অন্যান্য কিছু কৌশলও গ্রহণ করতে পারেন। এসব কিছুই আপনাকে সৃজনশীল হতে সাহায্য করবে।

মাইন্ডটুল থেকে অনুবাদ: দীপ্র আসিফুল হাই