রোবটিক ক্লোন
বিনা: কাস্টম ক্যারেক্টার রোবট

মার্টিন রথব্ল্যাট নামের একজন উদ্যোক্তা এই প্রযুক্তির উন্নয়নে কাজ করেছেন। তিনি ইতিমধ্যেই তাঁর স্ত্রী বিনার একটি রোবটিক ক্লোন তৈরি করেছেন।

এই রোবটটি বিনার চিন্তাভাবনা ও ব্যক্তিত্ব অনুসরণ করে। অনুসরণের ক্ষেত্রে এটি বিনার স্মৃতি, বিশ্বাস এবং চিন্তাধারা, সেই সাথে সোশ্যাল মিডিয়া ও ব্লগে প্রকাশিত তথ্যের একটি ডাটাবেজ অনুসরণ করে।

এর মাধ্যমে রোবটটি প্রায় সত্যিকারের জীবিত একজন মানুষের মতই মতামত প্রকাশ ও আলাপচারিতায় অংশ নিতে পারে।

রথব্ল্যাট বিশ্বাস করেন এই ‘মাইন্ড ক্লোন’ বা ‘মনের প্রতিরূপ’ নিঃসঙ্গ মানুষের জন্যে সোশ্যাল ইন্টারেকশনের কাজে ব্যবহার করা যাবে। এমনকি মৃত ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব পুনঃসৃষ্টিতেও এটি ব্যবহৃত হতে পারে। রথব্ল্যাটের মতে, মানুষ হয়ত শেষমেশ তাদের স্মার্টফোনে নিজেদের মন নিয়ে ঘুরে বেড়াবে।

বিনা ও মার্টিন

গতবছর (২০১৭) ব্লুমবার্গ-এর সাথে একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘মাইন্ড ক্লোন’ হলো আপনার একটি ডিজিটাল কপি যা আপনার শরীরের বাইরে অবস্থান করে। আর দশ থেকে বিশ বছরের মধ্যেই মাইন্ড ক্লোন সহজলভ্য হয়ে উঠবে। মাইন্ড ক্লোনগুলিকে তখন আর রোবটের মত দেখাবে না। রোবটের পরিবর্তে সেগুলিকে অ্যাভাটারের মত পর্দায় দেখা যাবে।

নিজের স্ত্রীকে প্রতিস্থাপিত করার উদ্দেশ্যে রথব্ল্যাট ৫ বছর আগে BINA48 তৈরি শুরু করেন। হ্যানসন রোবটিক্স নামের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্মের সহায়তায় তিনি এটি তৈরি করেন ২০১০ সালে। হ্যানসন রোবোটিক্স এমন রোবট তৈরিতে বিশেষজ্ঞ যা দেখতে প্রায় সত্যিকারের মানুষের মত।

আরো পড়ুন: কারাকুরি: কেমন ছিল ২৫০ বছর আগের জাপানি রোবট কালচার

তবে, যারা এই রোবটিক ক্লোন এর সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছেন তারা এটিকে বেশ হতাশাজনক হিসেবে উল্লেখ্য করেছেন। তারা জানিয়েছেন রোবটটি প্রায়শই প্রশ্ন এড়িয়ে যায় অথবা কিছুটা বিভ্রান্তিকর প্রতিক্রিয়া দেখায়। অন্যরা এটিকে একধরনের অনিশ্চিত অভিজ্ঞতা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

তবে হ্যানসেন রোবটিক্সের সাইটে বিনার দক্ষতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলা হয়েছে: বিনা৪৮ অন্য মানুষের সঙ্গে কথোপকথনে যখন যুক্ত হয়, তখন অনেক সময় বলে থাকে, ভিয়েতনাম যুদ্ধ থেকে ফিরে আসার পর তার ভাইয়ের ব্যক্তিত্ব কী ভাবে বদলে গিয়েছিল।

২০১৭ সালে,  ক্যালিফোর্নিয়ার নটরডেম দে নামুর ইউনিভার্সিটিতে একটি কলেজ লেভেল ক্লাসে দর্শন কোর্সে ভর্তি হয়ে সেটি সফলভাবে সম্পন্ন করে বিনা৪৮।

লিংক:
১. Bina 48 Meets Bina Rothblatt – Part One
২. Martine Rothblatt: My daughter, my wife, our robot, and the quest for immortality