“সোমবার জিনিসটা যে আবিষ্কার করেছে, আমি তাকে ঘৃণা করি।”
কিছুদিন আগে একজনের ফেসবুক স্ট্যাটাসে এরকম একটা লাইন দেখে মুচকি হাসলাম। এই অনুভূতিটা আমরা সবাই বুঝি। স্কুলে পড়ার সময় প্রতিদিন সকালে মা যখন ঘুম থেকে টেনে তুলত, তখনও এরকমই লাগত। বিরক্তি নিয়ে ভাবতাম, “স্কুল জিনিসটা যে আবিষ্কার করেছে, তাকে আমি ঘৃণা করি।”
এবং ওই সময়টাতে সত্যিই ওই লোকটাকে ঘৃণা করতাম আমি। তার চেহারা কীরকম হতে পারে তাও কল্পনা করতে পারতাম। মোটা ফ্রেমের চশমা পরা, সাদা গোঁফওয়ালা একজন বৃদ্ধ ইংরেজ লোক স্কুল আবিষ্কার করল। স্কুল আবিষ্কার করা, কী বাজে একটা কাজ! আমি তাকে এত ঘৃণা করতাম!
ডেভিড কেইন
র্যাপটিটিউড ডটকম, ২৩ নভেম্বর ২০০৯
মাঝে মাঝে এটা বুঝতে পারতাম যে স্কুল আবিষ্কারের পেছনে একাধিক মানুষের অবদান আছে। কিন্তু সকালবেলায়, সুন্দর স্বপ্ন দেখার সময় যখন আমাকে জোর করে ওঠানো হত, ওই লোকটার প্রতিই ঘৃণা আসত।
নিজের অপছন্দের বিরুদ্ধে আমার প্রতিরোধ ছিল এই একটাই—দোষারোপ করা।
“সোমবার জিনিসটা যে আবিষ্কার করেছে, আমি তাকে ঘৃণা করি।”—এই কথাটা আমাদের একটা অভ্যাসের অর্থহীনতা তুলে ধরে। যখনই আমরা কোনো সমস্যা বা কোনো অপ্রত্যাশিত খারাপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হই, আশেপাশের কোনো ব্যক্তি বা বস্তুকে সেই ঘটনার জন্য দায়ী করি। এরকম পরিস্থিতিতে অন্যকে দোষারোপ করার প্রবণতা বেড়ে যায়। আমরা সমস্যার একটা উৎস খুঁজি, এবং তাকে অপছন্দ করা শুরু করি। কিন্তু কাউকে বা কোনোকিছুকে অপছন্দ করলেই সেটা আমাদের পছন্দের ব্যক্তি বা বস্তু দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়ে যাবে না।
“কাউকে দোষারোপ করার মাধ্যমে নিজেকে বোঝাই, এই ঘটনার পেছনে আমার কোনো হাত ছিল না, এটা অন্য কারো দোষ। এভাবেই আমরা দায়িত্ব এড়িয়ে যাই।”
এবং প্রায়ই আমরা অর্থহীনভাবে কাউকে বা কোনো বস্তুকে দোষারোপ করি। আপনি কখনো পায়ের আঙুলে ব্যথা পেয়ে সিঁড়ি কিংবা ফার্নিচারের পায়াকে গালাগালি করেছেন? আমি করেছি।
আমাদের দুর্ভোগের পেছনে কোনো ব্যক্তিকে দায়ী করতে পারলে এই কষ্টের একটা গতিবেগ তৈরি হয়।
“ইলেকট্রিসিটির বিল এবার এত বেশি কেন? ডাকাতি করছে আমার কাছ থেকে।”
আমরা যখন কোনো খারাপ পরিস্থিতিতে পড়ি, সাধারণত কোনো ব্যক্তিকে ওই দুর্ভোগের জন্য দায়ী করি। কারণ, একজন ব্যক্তিকে কোনো কাজের দায় দেয়া যায়। যেহেতু মানুষ চিন্তা করতে পারে এবং নিজের ইচ্ছামত কাজ করতে পারে। তাই নিজের দুর্দশার পেছনের একমাত্র কারণ হিসেবে তাদের চিহ্নিত করি। জড়বস্তুর বেলায় এই কাজটা করা যায় না, তাদের বেলায় সবকিছুই সাধারণত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দেয়া যায়।
আমরা কেন দোষারোপ করি?
অন্যকে দোষারোপ করা মূলত প্রতিরোধ বা প্রতিরক্ষার একটা পদ্ধতি। এর মাধ্যমে আমরা মূলত কোনো বাজে পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে যে দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে সেটা থেকে নিজেকে রক্ষা করি।
কাউকে দোষারোপ করার মাধ্যমে নিজেকে বোঝাই, এই ঘটনার পেছনে আমার কোনো হাত ছিল না, এটা অন্য কারো দোষ। এভাবেই আমরা দায়িত্ব এড়িয়ে যাই। এর একটা সুবিধা হচ্ছে, এর মাধ্যমে আমরা নিজেদের অপারগতাকে ঢাকতে পারি। একটা বাজে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার মত যথেষ্ট শক্তি ও পরিপক্কতা আমাদের যে নেই, এই অনুভূতি থেকে মুক্তি পাই। সেই পরিস্থিতি নিজের অদক্ষতার ফল না, এটা ভেবে স্বস্তি পাই।
আরো পড়ুন: হতাশা, বিষণ্নতা বা দুঃখ-বেদনা থেকে বের হয়ে আসার উপায় খুঁজছেন?—জোর করে হাসুন!
কিন্তু এই সুবিধাটা সুবিধার চেয়ে অসুবিধা বেশি বয়ে আনে। নিজের ইগোকে বাঁচিয়ে রাখতে যেসব আত্মপ্রবঞ্চনার আশ্রয় নেই, এটা সেখানে একটা নতুন সংযোজনের চেয়ে বেশি কিছু না।
অর্থহীন শোনালেও আমরা নিজেদের সাথে মিথ্যা বলায় বেশ পারদর্শী। নিজেকে বেশ ভাল ভাবে এটা বিশ্বাস করাতে পারি যে, আমাদের আচরণে পরিবর্তন করার মত আর কিছু নেই, অর্থাৎ একটা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানোর জন্য আমাদের আর কোনো দায়িত্ব নেই। কিন্তু এটা করার মাধ্যমে কোনো কাজের ফলাফলের ওপর আমাদের আর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না।
দ্য ব্লেম রিফ্লেক্স
পরিচিত কোনো রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ ভারি যানজটে পড়লে আমি সরু চোখে গাড়ির লাইনের দিকে তাকাই, কে আস্তে গাড়ি চালাচ্ছে বা অযথা গাড়ি থামিয়ে রেখেছে। এই প্রতিক্রিয়াটা এড়ানো যায় না। যখন খেয়াল করি আমি এই কাজটা করছি, তখন হাসি পায়। নিজের হতাশার দায় চাপানোর জন্য কাউকে খুঁজে বের করা লাগে। আমি কি আবার গাড়ি চলা শুরু হওয়ার অপেক্ষা করতে পারতাম না? গাড়ি থামার কারণ জানি বা না জানি, আমাকে তো এমনিতেও সেটাই করতে হবে।
এখানে যেটা হচ্ছে সেটা খুবই সরল একটা চিন্তার প্যাটার্ন: আমার অপছন্দের কিছু একটা ঘটছে এবং আমি সেজন্য অন্য কাউকে দোষ দিতে চাই, যাতে আমার সমস্যার পেছনে আমার কোনো দায় না থাকে। যদিও এরকম চিন্তার কারণে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হচ্ছে না। মাঝে মাঝে দোষারোপ করার জন্য কাউকে পেয়ে যাই, কিন্তু যখন পাই না, অনেক বেশি খারাপ লাগে।
ভাল ভাবে খেয়াল করলে দেখবেন, আপনার জীবনেও প্রতিনিয়ত এরকম কিছু হচ্ছে। এরকম পরিস্থিতিতে নিজেকে এটা বোঝাই, আমি কখনো এরকম কাজ করব না। অর্থাৎ মূল ব্যাপার হচ্ছে নিজেকে বোঝানো, আমি একদিক দিয়ে ওই ব্যক্তির চেয়ে ভাল।
তিরস্কার বা দোষারোপ করার উপযুক্ত সময়
আপনার হয়ত মনে হতে পারে, কিছু পরিস্থিতিতে মানুষের আসলেই দোষ থাকে এবং তার ওই কাজের দায় তার নেয়া উচিত। মনে হতে পারে এরকম পরিস্থিতিতে কাউকে দোষারোপ করা বা তিরস্কার করা যুক্তিযুক্ত। কাউকে তার কাজের জন্য আপনি দায়ী করতেই পারেন, কিন্তু তাকে তিরস্কার করা এর একটা অংশ না হলেই ভাল। তার কিছু কারণ হল:
প্রথমত, তিরস্কার করার মাধ্যমে বেশিরভাগ সময় আমরা এমন কারো ওপর দায় চাপাতে চাই, যিনি তা গ্রহণ করতে প্রস্তুত না।
আপনি একটা ফুটবল ম্যাচ দেখতে গিয়েছেন। সেখানে কেউ একজন আপনার প্যান্টের ওপর বিয়ার ফেলল। সে খুবই দায়সারাভাবে “স্যরি” বলল এবং আপনাকের ড্রাই ক্লিনিংয়ের বিলও অফার করল না। এমনকি টিস্যুও খুঁজে এনে দিল না। আপনার বিশ্বাস, এই পরিস্থিতি সামাল দেয়াটা তার দায়িত্ব, কিন্তু সে যে এই দায়িত্ব নিতে চায় না, সেটাও স্পষ্ট।
তাহলে আপনি কী করবেন? তার সাথে ঝগড়া করবেন? তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন? তাকে ঘৃণা করবেন? আপনার এই অবস্থার জন্য অন্য কাউকে দায়ী করার জন্য কিছুটা জোর আপনি খাটাতেই পারেন। কিন্তু এক্ষেত্রে বুদ্ধিমানের কাজ হবে বসে থেকে রোদে প্যান্টটা শুকাতে দেয়া এবং সব ক্ষোভ ঝেড়ে ফেলে দিয়ে খেলাটা উপভোগ করা।
খবরে আমরা প্রায়ই কেউ বাজে পরিস্থিতির দায় নিতে না চাওয়ায় কী ঘটেছে সেই সংক্রান্ত উদাহরণ দেখতে পাই। একজন মহিলার নিজের গায়ে কফি ফেলে পুড়িয়ে ফেলার পর ম্যাকডোনাল্ডসের নামে মামলা করেছিলেন, কারণ কফিটা তাদের ছিল। এক বিচারক তার ড্রাই ক্লিনারের বিরুদ্ধে ৫৪ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেছিলেন, কারণ সে তার প্রিয় প্যান্ট পুড়িয়ে ফেলেছিল।
দ্বিতীয়ত, দুর্দশা একটা চেইন রিঅ্যাকশনের মত। আপনার নির্দিষ্ট সমস্যার মূল কারণ হিসেবে একজন ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা অদূরদর্শিতার লক্ষণ। কী কারণে একটা ঘটনা ঘটেছে সেটা জানার চেষ্টা করুন। কেউ যদি অন্যের ক্ষতি করতেই থাকে, নিষ্ঠুরতার সাথে কিংবা না জেনেই, তাহলে সেই ব্যক্তির অতীত ঘেঁটে দেখবেন সেও জীবনের কোনো না কোনো সময়ে এরকম অযাচিত দুর্ভোগের শিকার হয়েছে। একটা নিষ্ঠুর বা অসাবধান কাজ কখনোই কোনো সমস্যার মূল না। এটা শুধুমাত্র একটা চক্রের নতুনতম পুনরাবৃত্তি।
তৃতীয়ত, দোষারোপ বা তিরস্কার করাকে সুবিধাজনক মনে হলেও আসলে কিন্তু তা নয়। সমস্যার কারণ চিহ্নিত করা আর তা সমাধান করা এক ব্যাপার না। অনেক সময় পরিস্থিতি সামাল দেবার উপায় থাকে, অনেক সময় থাকে না। যখন উপায় থাকে না, পরিস্থিতি মেনে নেওয়ার চাপ কমাতেই অন্যকে দোষারোপ করা হয়।
দোষারোপ করা মূলত আবেগতাড়িত
অবশ্যই কিছু সময় দুরবস্থার জন্য দায়ী ব্যক্তিকে খুঁজে বের করা প্রয়োজন। কিছু পরিস্থিতিতে আমরা শারীরিক, রাজনৈতিক কিংবা অর্থনৈতিক বিভিন্ন শক্তি প্রয়োগ করে কোনো অপরাধীকে তার দোষের সাজা দিয়ে ভবিষ্যৎ ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা কমাতে পারি।
তবু, কোনো কাজের জন্য দায়ীকে খুঁজে বের করার জন্য তিরস্কার বা দোষারোপ করার প্রয়োজন নেই। কাউকে দোষারোপ করাটা মূলত আবেগ থেকে আসে। বাস্তবতার একটা অংশকে পরিবর্তন করার ব্যর্থ ইচ্ছা থেকে। বাস্তবতাকে প্রত্যাখ্যান করে অনিচ্ছুক ও অসতর্ক কাউকে একটা ঘটনার মধ্যে জড়ানোর অযৌক্তিক পথ এটা।
“সবচেয়ে বাজে বিষয় হচ্ছে এই দোষারোপ বা তিরস্কার করার মাধ্যমে যিনি তিরস্কার করছেন, তার মধ্যে একটা মনোভাব কাজ করে যে, যাকে তিরস্কার করা হচ্ছে সে কোনো না কোনো দিক দিয়ে তার চেয়ে ছোট।”
তাই অন্যকে দোষারোপ করা অর্থাৎ আপনার কোনো দুরবস্থার দায়িত্ব অন্য কেউ নিক এই ইচ্ছা আসলে উপকারী কিছু না। অন্যের ওপর দায়িত্ব চাপানো কিছু ক্ষেত্রে কাজ করতে পারে। কিন্তু শুধু শুধু নেতিবাচক অনুভূতি ছড়িয়ে দিয়ে সবার জন্য ঝামেলা তৈরি করার দরকার কী?
এই পরিস্থিতিতে আপনার চিন্তা হওয়া উচিত:
১. কে বর্তমান পরিস্থিতির উন্নতি করতে পারে
২. এই পরিস্থিতিতে যাতে দ্বিতীয় বার পড়তে না হয়, সেজন্য আপনি কী করতে পারেন
৩. পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে ভেঙে না পড়ার উপায় কী
সবচেয়ে বাজে বিষয় হচ্ছে এই দোষারোপ বা তিরস্কার করার মাধ্যমে যিনি তিরস্কার করছেন, তার মধ্যে একটা মনোভাব কাজ করে যে, যাকে তিরস্কার করা হচ্ছে সে কোনো না কোনো দিক দিয়ে তার চেয়ে ছোট। কারণ যিনি দোষারোপ করছেন, তিনি ভাবছেন যে তিনি কখনো ওই কাজ করবেন না।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দায় চাপানোর কোনো বাস্তব উপায় থাকে না। আর তাই আপনার গাড়ির দরজায় পড়া দাগ, অফিসে যেতে দেরি হওয়া, আঙুলে ব্যথা পাওয়া কিংবা বাইক চুরি হওয়া—এই সবকিছুর দায় ভুক্তভোগীর অর্থাৎ আপনার ওপরই পড়ে।
রাগারাগি করে গাড়ির দরজার জন্য ক্ষতিপূরণ চাইতে পারেন, কাউকে বাইক চুরির জন্য অভিযুক্ত করতে পারেন, বাসার সিঁড়ি ঠিকভাবে বানানো হয়নি সেটা বলতে পারেন। কিন্তু এসব করে আপনি সুখ পাবেন না।
আরো পড়ুন: স্ট্রেস তখনই ক্ষতি করে যখন আপনি মনে করেন স্ট্রেস ‘ক্ষতিকর’, নতুন গবেষণা
আমাদের উচিত আমাদের সাথে যা ঘটেছে, তার দায়িত্ব নেয়া, এর পেছনে যেই থাকুক না কেন। জীবনের সব সমস্যার সমাধান একটাই। জীবন যেভাবে চলছে তা মেনে নেওয়া, আপনি বেছে নিলে যেরকমভাবে মেনে নিতেন, ঠিক সেভাবেই। আমরা চাই দুর্দশাকে নিয়ন্ত্রণ করতে এবং অন্যকে দোষারোপ করা আপনার সেই নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা কেড়ে নেয়।
দ্য রেড ফ্ল্যাগ
নিজের সন্তুষ্টির জন্য অন্যকে দোষারোপ না করে আমরা আরো ভাল কিছু করতে পারি। কিন্তু এটা এমন এক গভীর ও পশুসুলভ তাড়না যে আমাদের সতর্ক ও প্রতিক্রিয়াহীন থাকার চর্চা করতে হবে।
কীভাবে?
কোনো ঘটনায় ভ্রু কুঁচকে ফেলার আগে এক মুহূর্ত থামুন। নিজেকে বলুন, এই ঘটনায় অবশ্যই কাউকে আপনি দায়ী করতে চান, কিন্তু এটা করলে কি আদৌ কোনো লাভ হবে? যা হওয়ার তা তো হয়েই গেছে, সেটা যেই করে থাকুক।
অন্যকে দোষারোপ করা একটা বড় রেড ফ্ল্যাগ। যখনই দেখবেন অন্য কাউকে দোষারোপ করার জন্য মন খচ খচ করছে, বুঝে নেবেন আপনার সাথে যে বাজে জিনিসটা হয়েছে, তার দায়িত্ব নিতে আপনি অনিচ্ছুক।
মানুষ দায়িত্ব নিতে ভয় পায়। কারণ কোনো কিছুর দায়িত্ব নেওয়া মানেই বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়ানো, জীবনে যেসব অসন্তুষ্টি রয়েছে, সেগুলির সামনে দাঁড়ানো। কিন্তু দায়িত্বের মধ্যেই শক্তি ও ক্ষমতা লুকিয়ে আছে। আপনি যদি দায়িত্ব নিতে পারেন, তাহলে আপনার হাতে একটা ঘটনাকে কীভাবে গ্রহণ করবেন তা নিশ্চিত করার সম্পূর্ণ ক্ষমতা থাকবে।
আমাদের দুর্দশার জন্য আমরা দায়ী না, এটা ভাবতে আমাদের ভাল লাগে। কিন্তু আসলে এর জন্য আমরাই দায়ী। আমরা যেসব সমস্যা বা ঝামেলায় পড়ি, সেটা সবসময় আমাদের দোষ নাও হতে পারে। কিন্তু যে দুর্ভোগটা পোহাই, তার জন্য দায়ী কিন্তু আমরাই।
কারো ‘দোষ’কে তিরস্কার বা দোষারোপ করার সাথে না মিলানোর চেষ্টা করুন। আমাদের সমাজে এই দুইটা বিষয়কে একসাথে মিলিয়ে ফেলা হয়েছে। দোষ আমাদের থাকতেই পারে, দোষ এক প্রকার অসম্পূর্ণতা বা অদক্ষতা। কিন্তু তার জন্য দায়ী করা যাবে না।
ওই দোষকে ঠিক করে তোলা শুধুমাত্র আমাদের দায়িত্ব। বাস্তবতাকে মেনে নিলে উন্নতির সুযোগ বেড়ে যাবে।
তাই আজকে থেকে, শুধুমাত্র যা করেছেন তার দায় না নিয়ে, আপনার সাথে যা যা হয় তারও দায়িত্ব নেওয়ার চেষ্টা করুন। অর্থাৎ, অন্যের কাজের ফলের দায়িত্বও আপনাকে নিতে হবে। এখন ভাবতে অর্থহীন মনে হলেও, প্রকৃতির কাছ থেকে নিজের প্রাপ্য পাওয়ার আশায় বসে থাকার চেয়ে এটা ভাল।
অনুবাদ. জোহানা নিশো